শিরোনাম
নিজস্ব প্রতিবেদক | ০৭:৫৮ পিএম, ২০২১-১০-১৬
নুর মোহাম্মদ :
চট্টগ্রাম নগরীর বাকলিয়া এলাকায় এক আতঙ্কের নাম দুই কিশোর গ্যাং লিডার জিয়াম উদ্দিন আরমান ( ২১) ও জিসান উদ্দিন রোকন ( ২১)। সম্পর্কে তারা দুইজন জমজ ভাই। অপহরণ, চুরি, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, ইয়াবা ও মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ এবং সুন্দরী নারীদের দিয়ে ব্ল্যাকমেইলসহ তাদের বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকান্ডে দিনদিন অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে এলাকাবাসী। তারা দুইজন দুর্র্ধষ পেশাদার সন্ত্রাসী, অপহরণকারী এবং চাঁদাবাজ চক্রের সক্রিয় সদস্য। বাকলিয়া থানায় এ দুই গ্যাং লিডারের নামে নারী ও শিশু অপহরণ, চুরি, চাঁদাবাজি ও মাদকের মামলাসহ মোট ৫ টি মামলা রয়েছে। ভিন্ন ভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে অনিবন্ধিত এবং অন্যের নামে থাকা সিম দিয়ে ঘটায় অপরাধমূলক কর্মকান্ড। ভয় দেখিয়ে ব্যবসায়ী ও বিভিন্ন লোকদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করে তারা। তাদের বিরুদ্ধে অসংখ্য অভিযোগ ও মামলা থাকলেও ভয়ে কেউ মুখ খুলতে চায় না। একাধিকবার আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গ্রেফতার হলেও জামিনে বেরিয়ে এসে তারা আবার বিভিন্ন অপকর্মে লিপ্ত হয়। তাদের অত্যাচারে অতিষ্ট হয়ে র্যাব-৭ বরাবরে লিখিত অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী এক ব্যবসায়ী। পুলিশ বলছে, বাকলিয়া এলাকায় এমন কোন অপরাধ নেই যা তারা দুই ভাই করেনি। সর্বশেষ ১৩ বছরের এক শিশুকে শাহ আমানত সেতু থেকে অপহরণ করে চাঁদা আদায়ের ঘটনায় তাদের গ্রেফতার করে পুলিশ। মোবাইল চুরি এবং ছিনতাইয়ের পাশাপাশি অপহরণ করে চাঁদা আদায় দুই ভাইয়ের প্রধান টার্গেট। কৌশল হিসেবে চুরি করা মোবাইলের সিম রেখে বিক্রি করে দিত সেটগুলো। পরে এসব সিম থেকে ফোন করে চাঁদা আদায় করতো তারা। জানা যায়, বাকলিয়া এলাকার অপরাধ জগতের নিয়ন্ত্রক হিসেবে পরিচিত দুর্র্ধষ গ্যাং লিডার জিয়াম উদ্দিন আরমান ও জিসান উদ্দিন রোকন। তাদের পিতার নাম জমির উদ্দিন। তাদের নিজ বাড়ি আনোয়ারা উপজেলার ৯ নং পরৈকোড়া ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ড কৈখাইন গাংকুল হাজী আজগর আলীর বাড়িতে। বর্তমানে নতুন ব্রীজ এলাকার ক্ষেতচর ১ নং গলির মুখে বাস্তহারা কলোনীতে বসবাস করেন। দীর্ঘদিন যাবৎ বাকলিয়া এলাকায় দেশীয় ধারালো অস্ত্র দিয়ে চুরি, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়, বাস্তহারা কলোনিতে ইয়াবা ও মাদক ব্যবসাসহ , সুন্দরী নারীদের দিয়ে ব্ল্যাকমেইল করে লোকজন আটকে রেখে অর্থ আদায়ের মত গুরুতর অপরাধে জড়িত এই দুই গ্যাং লিডার। সর্বশেষ গত ৬ মার্চ সন্ধ্যায় শাহ আমানত সেতু এলাকায় থেকে ইমাম হোসেন (১৩) নামে এক মাদ্রাসা ছাত্রকে দুই ভাই মিলে অপহরণ করে। অপহৃত ইমাম হোসেন সীতাকুণ্ডের ভাটিয়ারি মাদামবিবির হাট এলাকার ইকবাল হোসেনের ছেলে। তার বাড়ি কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলায়। অপহরণ করে তার বাবার কাছে ৪০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করে তারা। নগদ অ্যাপসে সাড়ে ৯ হাজার টাকা পরিশোধের পরও ছেড়ে না দেওয়ায় বাকলিয়া থানায় অভিযোগ করেন ইকবালের বাবা। অভিযোগ পেয়ে মুক্তিপণ যে মোবাইল নম্বর থেকে চাওয়া হয়েছিল, সেই নম্বরের সূত্র ধরে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় ওই মোবাইল ব্যবহারকারী হিসেবে রোকনকে শনাক্ত করে ১৪ মার্চ গভীর রাতে নগরীর ক্ষেতচর বাস্তুহারা কলোনির বাসা থেকে রোকনকে গ্রেফতার করে পুলিস। এ ঘটনায় বাকলিয়া থানায় তাদের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করা হয়। যার মামলা নং ৪৭-(৩) ২১। জিআর নং ১৭৩/২। এছাড়া কর্ণফুলী শাহ আমানত সেতু এলাকায় বিভিন্ন জায়গা থেকে আসা লোকজন ও সাধারণ ব্যবসায়ীদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে তাদের কাছে থাকা মোবাইল, টাকা পয়সা ও মূল্যাবান জিনিসপত্র ছিনতাই করে নিয়ে যায়। তাদের একটি চক্র রয়েছে। সুন্দরী নারী দিয়ে ব্ল্যাকমেইল করে প্রেমের ফাঁদে ফেলে সর্বশান্ত করে এ চক্রটি। তারা শাহ আমানত সেতু এলাকায় বিভিন্ন লোকজন ও মোবাইল ফোনে প্রেমের ফাঁদ ফেতে বিভিন্ন যুবক ও ব্যবসায়ীদের সাথে সখ্যতা গড়ে তুলে কৌশলে ডেকে নিতো। পরে তাদের একটি ঘরে আটকে রেখে ব্ল্যাকমেইল করার ভয় দেখিয়ে মোটা অংকের টাকা আদায় করতেন। গত এপ্রিল মাসে রমজানের সময় এক নারীকে দিয়ে ব্লাকমেইল করাতে গিয়ে কর্ণফুলির মইজ্যারটেক এলাকায় গণধোলাইয়ের শিকার হন জিয়াম উদ্দিন আরমান। এর আগেও একটি চুরির মামলায় জিয়াম উদ্দিন আরমানকে গ্রেফতার করে বাকলিয়া থানা পুলিশ। বিভিন্ন সময় গ্রেফতার হলেও জেল থেকে বেরিয়ে দমেনি গ্যাংটির ত্রাস। তবুও প্রকাশ্যে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে এলাকায়। প্রতিদিন ছিনতাইসহ আবার নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। নুতন ব্রীজ এলাকার ভুক্তভোগী এক ব্যবসায়ী জানান, তারা আমার কাছ থেকে ২ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। ০১৮-২৩৪৩৯৮৩৮, ০১৮২৭৩৭৯৮৫৪ দুইটি নাম্বার থেকে ফোন দিয়ে বলে নতুন ব্রীজ এলাকায় ব্যবসা করতে হলে তাঁদেরকে চাঁদা দিতে হবে। চাঁদা না দিলে আমাকে ব্যবসা করতে দিবেন না এবং অপহরণ করে লাশ গুম করিয়ে ফেলবে বলে বিভিন্নভাবে হুমকি দেয়। আমি নিরাপত্তা চেয়ে চট্টগ্রাম চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি জিডি করি। আমার নিজের নিরাপত্তা ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নিয়ে নিরাপত্তাহীনতাই ভুগছি। দুই গ্যাং লিডারের বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকান্ডের বিষয়ে জানতে চাইলে বাকলিয়া থানার সেকেন্ড অফিসার সাজেদ কামাল বলেন, এক ভাইয়ের বিরুদ্ধে ৩টি, আরেকজনের বিরুদ্ধে ২টিসহ মোট ৫ টি মামলা থানায় রয়েছে। তাদের সম্পর্কে আমরা আরও নজরদারি বাড়াব। কোন ভুক্তভোগী থানায় এসে অভিযোগ করলে তদন্ত করে সঙ্গে সঙ্গে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করব। তিনি আরও বলেন, অপরাধ করে কোন আসামি পার পাওয়ার সুযোগ নেই। বাকলিয়া এলাকায় অপহরণ, চুরি, ছিনতাইকারীদের বিরুদ্ধে প্রতিদিন আমাদের অভিযান চলছে। যারা আগে অপরাধ করে জেলে গিয়ে জামিনে বের হয়েছে তাদের খোঁজখবর ও আমরা রাখছি। অপরাধীরা যদি জেল থেকে বের হয়ে ভাল হতে চায় তাদেরকে আমরা ভাল হওয়ার সুযোগ দিচ্ছি আর যদি পুনরায় অপরাধে জড়িয়ে পড়ে তাদের বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। আমাদের কাছে কোন ভুক্তভোগী অভিযোগ করার পর তদন্ত করে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিচ্ছি।
স্টাফ রিপোর্টার : : নতুন করে কোনো বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হবে না। সলিমপুরে পাহাড় ব্যবস্থাপনার জন্য, কর্মকর্তা ও আইনশৃঙ্খ...বিস্তারিত
স্টাফ রিপোর্টার : : হানিফ পরিবহনের একটি বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুটি সিএনজি অটোরিকশা, মিনিবাস ও মোটরসাইকেলকে ধাক্কা দিয়...বিস্তারিত
স্টাফ রিপোর্টার : : বিজয়া দশমীর আনুষ্ঠানিকতা শেষে চট্টগ্রামের পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতে প্রতিমা বিসর্জন শুরু হয়েছে। ব...বিস্তারিত
আমাদের ডেস্ক : : চট্টগ্রামে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ২২ জনের দেহে করোনাভাইরাসের জীবাণু পাওয়া গেছে। শনাক্তের হার ১৮ দশমিক ১...বিস্তারিত
খবর বিজ্ঞপ্তি : চট্টগ্রাম নগরীর আসকার দীঘির পাড়ে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড-এর ৩৮৮তম শাখার উদ্বোধন করা হয়ে...বিস্তারিত
খবর বিজ্ঞপ্তি : বায়তুশ শরফ আদর্শ কামিল (অনার্স-মাস্টার্স) মাদ্রাসার ৪০তম বার্ষিক সভা ও নির্বাচিত বেসরকারী মাদ্রা...বিস্তারিত
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৯ - © 2024 Dainik amader Chattagram | Developed By Muktodhara Technology Limited